ফুলকপি-বাধাকপি সহ শাক-সবজির উপকারিতা


ফুলকপি বাধাকপি সহ শাক-সবজির অনেক বেশি উপকারিতা রয়েছে। যা আমাদের শরীরের সুরক্ষায় অতি প্রয়োজনীয়। নিয়মিত শাক-সবজি খেলে শরীর ভালো থাকে। কারণ শরীরের প্রয়োজনীয় সব ভিটামিনই রয়েছে সবজিতে। তাই শীতের সবজি খান। আপনার শরীরকে সুস্থ রাখুন। নিম্নে কিছু শীতকালীন শাক-সবজির গুণাগুণ দেয়া হলো।


ফুলকপি : ফুলকপি শীতকালীন অন্যতম জনপ্রিয় সবজি। এতে রয়েছে ভিটামিন এ, সি, ক্যালসিয়াম, মিনারেল, আ্যন্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইটোকেমিক্যাল ইত্যাদি। এর মধ্যে শতকরা ৮৫ ভাগ পানি রয়েছে। ফুলকপিতে রয়েছে ফাইবার যা দেহের খাবার হজমে সাহায্য করে। ফুলকপির মধ্যে থাকা সালফোরাফেন যা মানুষের উচ্চ রক্তচাপ কমাতে বিশেষ সহযগিতা করে থাকে। ইন্ডোল ৩ কর্বোনোল একটি অ্যন্টিইনফ্লামেটারি উপাদান, যা দেহের ইনফ্লমেটরি রিঅ্যাকশন প্রতিরোধ করে থাকে।এর ফলে পাকস্থলীর প্রাচীরের সুরক্ষায় প্রচুর কাজ করে। একটি মাঝারী আকারের ফুলকপিতে রয়েছে খাদ্যশক্তি ২৫ কিলোক্যালরী, কার্বোহাইড্রেড ৪.৯৭ গ্রাম, প্রোটিন ১.৯২ গ্রাম, ফ্যাট ০.২৮, আঁশ ২ গ্রাম, ফোলেট ০.৫৭ মারক্রো গ্রাম, থায়মিন ০.০৫ মাইক্রো গ্রাম। ফুলকপির সবচেয়ে বিশেষ উপকারিতা হলো বিদ্যমান ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড মস্তিস্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে।

বাধাকপি : বাধাকপিতে ও রয়েছে প্রচুর পুষ্টি। ১০০ গ্রাম বাধাকপিতে রয়েছে খাদ্যশক্তি ২৫ কিলোক্যালরী, শর্করা ৫.৮ গ্রাম, চিনি ৩.২ গ্রাম, খাদ্য আঁশ ২.৫ গ্রাম, চর্বি ০.১ গ্রাম, আমিষ ১.২৮ গ্রাম, থায়ামিন ০.৬৬৬১ মিলিগ্রাম, ভিটামিন কে ৭৬ আইইউ, ক্যালসিয়াম ৪০ মিলিগ্রাম ইত্যাদি। বাধাকপিতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস থাকে, যা আমাদের হাড়কে অথিক মজবুত করার জন্য সাহায্য করে। আপনি বাধাকপি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, আপনি যদি নিয়মিত বাধাকপি খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।এছাড়া ও বাধাকপিতে প্রচুর খাদ্যআঁশ রয়েছে, যা খাবার হজমে সহায়তা করে থাকে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। লাল বাধাকপিতে ৩৬ রকমের ফ্ল্যাভোনয়েড এবং অ্যানথোরাসায়ামিন রয়েছে, যা মানুষের ক্যান্সার প্রতিরোধে কাজ করে থাকে। বাধাকপি ভিটামিন সি, সালফার বিষাক্ত ইঊরিক এসিড দূর করে থাকে। আপনি বাধাকপি সবজি, সালাদ ও স্যুপ করে খাওয়া যেতে পারে।

শিম : ১০০ গ্রাম শিমে ৮৬ দশমিক ১ গ্রাম জলীয় অংশ, খাদ্যশক্তি ৪৮ কিলোক্যালরী, ৩.৮ গ্রাম প্রোটিন, ৬.৭ গ্রাম শর্করা, ২১০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম রয়েছে। শিমের বিচিতে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এছাড়া ও এর মধ্যে থাকা অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি হৃদরোগ প্রতিরোধ করে থাকে। শিম বাতের ব্যথা কমাতে সাহায্য এবং চুলের সুরক্ষায়ও বিশেষ ভুমিকা রাখে। শিমের অাঁশ যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে থাকে। শিম ক্যান্সার ও জন্মগত ত্রুটি প্রতিরোধে সাহায্য করে থাকে।এছাড়া ও কোলন অ্যাডনেমার এর বিপরীতে কাজ করে থাকে, যাতে কোলন ক্যান্সার রোধ হয়ে থাকে।

গাজর : গাজর আঁশযুক্ত পুষ্টিসমৃদ্ধ সবজির মধ্যে অন্যতম। যা আপনি সালাদ, রান্না করা মিক্স সবজিতে দিয়েও খাওয়া যেতে পারে। গাজরের হালুয়া যা অনেক জনপ্রিয়। ক্যান্সার প্রতিরোধে গাজর ভূমিকা রয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, গাজর ফুসফুসের ক্যান্সার, স্তন ক্যান্সার ও কোলন ক্যান্সার রোধ করে থাকে। গাজরের বিটা কেরোটিন, লিউটিন কোলেষ্টেরল কমায় যা শরীরের জন্য উপকারী।এমন কি দাঁতের গোড়ায় যেসব ব্যাকটেরিয়া জন্ম নেয়। গাজর এইসব ব্যাকটেরিয়া নষ্ট করতে সযযোগীতা করে। গাজর লিভারের টক্রিন জাতীয় উপাদানও পরিস্কার করে থাকে এবং লিভারের চর্বি কমাতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সপ্তাহে ৬টির বেশী গাজর খায় তাদের স্ট্রোক আক্রান্ত হবার ঝুকি খুবই কম থাকে।

লেটুসপাতা : লেটুসপাতা খুব উপকারী অাঁশযুক্ত সবজি যা হজমে সাহায্য করে থাকে। লেটুসে প্রচুর আয়রণ থাকে যা গর্ভবতীদের মা এর জন্য খুব প্রয়োজনীয়। লেটুস পাতায় প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি, পটাসিয়াম থাকে। লেটুস পাতার সোডিয়াম, ভিটামিন বি১, ভিটামিন বি২,ভিটামিন বি৩ শরীরের অঙ্গে পানি জমে যাওয়া রোধ করে থাকে। এর মধ্যে ভিটামিন এ রয়েছে প্রচুর, যা বিপাক প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে থাকে। এমন কি চোখের জন্যও বিশেষ উপকারী। রক্তের সুস্থতার জন্য প্রয়োজনীয় পটাসিয়াম লেটুস পাতায় যথেষ্ট পরিমাণ থাকে যা আমাদের রক্ত পরিস্কার করে থাকে। ১০০ গ্রাম লেটুস পাতায় খাদ্যশক্তি ১৫ ক্যালরী, ২৮ মিলিগ্রাম সোডিয়াম, ১৯৪ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম, ২.৯ গ্রাম কারবোহাইড্রেড, ভিটামিন এ, বি, সি, আয়রণ ও ক্যালসিয়াম ম্যাগনেশিয়াম রয়েছে।
জানেন কি ? যে খাবারে প্রোটিন-এর পরিমাণ বেশী রয়েছে, সে খাবারে ফরমালিন কাজ করে থাকে। তাই শাঁক সবজিতে সাধারণত প্রোটিন নামে মাত্র, তাই ফরমালিন দিলেও তা কাজ সক্ষম হয় না।
শাক-সবজির মধ্যে ফরমালিন মিশানো হয় না। এটি আপনি নিচিন্তে খেতে পারেন।
Previous Post Next Post

Contact Form