শীতে আপনার শিশু অসুস্থ্য হবার আগে যত্ন ও পরিচর্যা নিন


শীতে শিশুর যত্ন ও পরিচর্যা
ঋতুর পরিবর্তনের মাধ্যমে শীতকালেই আর্বিভাব হয়ে থাকে।
শীতকালে সাধারণত শিশুরা খুব অল্প সময়ে অসুস্থ্য হয়ে থাকে।


তাই শীতকালে শিশুর চাই বাড়তি যত্ন। এছাড়াও আপনি আপনার শিশুর যত্নে সবসময় সজাগ দৃষ্টি রাখুন।


এই সময়ে সাধারণত ঠাণ্ডা, সর্দি, কাশিসহ অন্যান্য রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি হয়ে থাকে ও এমন কি ভাইরাস ঘটিত কিছু রোগ শিশুর স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় যা স্বাভাবিক অনেক বেশি দেখা যায়।

তাই শীতে আপনার শিশুর যত্ন নিতে তার স্বাস্থের প্রতি বিশেষ ভাবে খেয়াল রাখুন।
সামান্য একটু অসাবধানতা ডেকে আনতে পারে আপনার শিশুর অনেক বড় ধরণের সমস্যা।
তাই এই শীতে আপনার শিশুর সঠিক পরিচর্যা ও সুস্বাস্থের প্রতি খেয়াল রাখুন এবং অন্য সময়ের চেয়ে একটু বেশি যত্ন নিন।
এই শীতে শিশুর স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায় ও শীতে শিশুর পরিচর্যার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন নিবেদিতা শিশু হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক শরিফুল হক।

শীতে শিশুর যত্ন ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় জন্য আপনার করণীয়

শীত ঋতুটি অন্য মৌসুমের চেয়ে ভিন্ন হয়ে থাকে। আপনাকে এ সময়ে বাড়তি সতর্কতা রাখতে হবে আপনার আদরের শিশুর প্রতি।

সাধারণত শিশু যখন মায়ের পেটে অবস্থান করে তখন সে উষ্ণ তাপমাত্রায় থাকে। তাই পৃথিবীর তাপমাত্রায় সে শীত অনুভব করে থাকে।

এছাড়া একটি শিশুর শরীরে তাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা তৈরি হতেও বেশ কিছু সময় লাগে। তাই পৃথিবীতে কিছুদিন হল এসেছে এমন শিশুকে উষ্ণ তাপমাত্রায় রাখুন।

যদি আপনার ঘরের তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি হয়,

তবে শিশুকে সুতিকাপড় পরিধান করিয়ে কাঁথা দিয়ে মুড়ে রাখুন। তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি নিচে হলে সোয়েটার ব্যবহার করুন।

* আপনার শিশুকে ঘন ঘন বুকের দুধ খাওয়ান। বুকের দুধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকে। ফলে শিশু সহজে ঠাণ্ডা, কাশি ইত্যাদিতে রোগে সহজেই আক্রান্ত হয় না।

কিন্তু যেসব শিশু কোনো কারণে বুকের দুধ খায় না বা পায় না, তাদের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করুন।

* আপনি দিনের বেলা ঘরের জানালা খুলে দিন যাতে রোদ ও নির্মল বাতাস ঘরে ঢুকতে পারে।

ঘরের মধ্যে কাপড় না শুকিয়ে অবশ্যই রোদে শুকান।

আপনি বাচ্চাকে আলাদা (দোলনায় বা আলাদা মশারির নিচে) না রেখে মায়ের কোলঘেঁষে শোয়াবেন।

এতে বাচ্চা যেমন উষ্ণ থাকবে, তেমনি মায়ের সঙ্গে আন্তরিকতা বাড়বে এবং বুকের দুধ খাওয়াতে সুবিধা হয়ে থাকে।
* যদি আপনার পরিবারের কোনো সদস্য সর্দি, কাশি, ভাইরাস জ্বর ইত্যাদি হয়ে থাকে তবে তারা মা ও শিশুর কাছে আসা থেকে দূরে থাকুন।

শিশুকে শীতকালে ঘরের বাইরে নেওয়াই ভালো।

* শীতের দিনে শিশুকে রোদ দিতে হলে জানালার পাশে বা ঘরের বারান্দা থেকে রোদ লাগান।

তবে নবজাতককে জন্মের সঙ্গে সঙ্গে গোসল করানোর উচিত নয়।

শিশুর নাভি না শুকানো পর্যন্ত তাকে গোসল করাবেন না। আপনি সপ্তাহে দু’দিন গোসল করালেই যথেষ্ট হবে।

* প্রয়োজনীয় হালকা গরম পানি (৪৫০ ডিগ্রি) গোসলের জন্য ব্যাবহার করতে পারেন, নরম কাপড় বা স্পঞ্জ, তোয়ালে, ভ্যাসলিন, ডায়াপার ইত্যাদি সব হাতের কাছে গুছিয়ে নিয়ে তারপর গোসল করাতে বসুন।

* নবজাতকের সামান্য কাশি বা হাঁচিও কিন্তু সন্দেহজনক।

আপনি বিশেষভাবে খেয়াল করবেন যেন কাশি, শব্দ করে শ্বাস টানা, দুধ টেনে খেতে না পারা, শ্বাস নিতে কষ্ট বা পাঁজর নিশ্বাসের সঙ্গে বেঁকে যেতে থাকলে তাড়াতাড়ি চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।
দেড় মাস থেকে ১ বছর বয়সী শিশুর যত্নর জন্য কিছু টিপস:
* আপনার শিশুকে উষ্ণ রাখুন। ঠাণ্ডা পরিবেশ থেকে দূরে রাখুন। আপনার স্যাঁতসেঁতে ঘর থেকেও শিশুকে দূরে রাখুন ।
* আপনার শিশুকে নিয়মিত মায়ের বুকের দুধ খাওয়ান। যদি ফিডারে দুধ খাওয়ান তাহলে কিছু সময় ধরে হালকা গরম করে নিন।
* আপনার শিশুর বয়স ছয় মাসের বেশি হলে শিশুকে মায়ের বুকের দুধের পাশাপাশি অন্য খাবার খেতে দিন।
যেমন অন্য খাবার মধ্যে আপনার শিশুকে খিচুড়িতে ডিমের সাদা অংশ, লাল শাক,
পালং শাক ইত্যাদি অল্প করে দিন।
এছাড়াও লেবুর রস,কমলার রস খাওয়াতে পারেন। এতে আপনার শিশুর রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।
* যেসব বাচ্চা হামাগুড়ি দেয়, দেখবেন তারা যেন ঠাণ্ডা মেঝেতে হামাগুড়ি না দেয়। তবে কার্পেট ব্যবহার না করাই ভালো।
কারণ কার্পেটের রোয়া বা ধুলা থেকে অ্যালার্জি হয়। তাই মাদুর বা ম্যাট ব্যবহার করা ভালো।
* ঈষদুষ্ণ পানি দিয়ে ১ দিন অন্তর গোসল করান। গোসলের পর বেবি লোশন লাগাবেন। তেল-জাতীয় কিছু লাগাবেন না।
* আপনার শিশুকে নরম কাপড়ের জুতা পড়ান। শিশুকে ঘুমানোর সময় মোজা পরিয়ে শোয়ান এতে শিশুর শরীর গরম থাকে। তবে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যে উলের তৈরী মোজা নয়।
* সাধারণত এ বয়সী শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কম থাকে। তাই সর্দি, কাশির মত রোগ সহজেই হয়ে থাকে।
আপনার শিশুকে জনবহুল জায়গায় (মেলা, পিকনিক) না নিয়ে যাওয়াই ভালো।

১ থেকে ৬ বছর বয়সের শিশুর যত্নর জন্য কিছু টিপস:
* সাধারণত এই বয়সে শিশুরা অনেক খেলাধুলা ও দৌড়াদৌড়ি করে থাকে। তাই হালকা কাপড় পরাতে পারেন। সাধারণত গরম ও ভারী কাপড় পরার প্রয়োজন হয় না।

তবে আপনি আপনার শিশুকে সকালে স্কুলে যাওয়ার সময় থেকে বিকেলে খেলতে যাওয়ার সময় পর্যন্ত উষ্ণতা নিশ্চিত করুন।
* শীতকালে শিশুদের সাধারণত পরস্পরের মাধ্যমে কিছু ছোঁয়াচে চর্মরোগ হতে পারে। তাই শিশুর ত্বকের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখুন।
নিয়মিত লোশন লাগান যেন আপনার শিশুর ত্বক শুষ্ক না হয়ে যায়।

* আপনার শিশুকে শীতকালীন শাকসবজি ও ফল-মূল বেশি করে খেতে দিন। এতে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
মিঃ লেখক !

Hi, I'm Mohammad Roman , as the designer of this blog and I really like to make web design, art and vectors